অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঈদের ছুটিতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই জয় মজুমদার ও দীপ মজুমদার রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। এই টাকা তারা প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১টায় মহিপুর থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ আবুল খায়েরের হাতে টাকাগুলো তুলে দেওয়া হয়। তিনি টাকাগুলো আদালতে জমা দেন।
পটুয়াখালীর মহিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ী সরদার মৎস্য আড়তের মালিক মোশাররফ সরদার টাকাগুলো তার বলে দাবি করছেন। তিনি খবর পেয়ে থানায় উপস্থিত হয় এর সপক্ষে প্রমাণাদি উপস্থাপন করেছেন। সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে টাকাগুলো থানায় রাখার কারণে আদালতের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে, এমনটাই জানিয়েছেন এস আই নুরুন্নবী।
তিনি বলেন, মহিপুর থানার ওসির নির্দেশে জব্দ তালিকা ও জিডি আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুই ভাইয়ের সততার এমন দৃষ্টান্তের বিষয়ে ওসি আবুল খায়ের বলেন, অনেক তরুণ আছে বিপথগামী। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জয় মজুমদার এবং দীপ মজুমদার এরমধ্যে ব্যতিক্রম। তারা প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করার জন্য আমার হাতে পাওয়া টাকা দিয়ে গেলেন। এমন তরুণরা এ দেশের গর্ব। তাদের সততা সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
তারা কলাপাড়া পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাসপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা। জয় মজুমদার পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর তার ভাই দীপ মজুমদার ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাদের বাবা পিযুস কান্তি মজুমদার কলাপাড়া পৌরসভায় প্রধান সহকারী হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয় ও দীপ গত সোমবার বিকালে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় বেড়াতে যান। কুয়াকাটায় ঘুরে-ফিরে যখন কলাপাড়া পৌর শহরের বাড়িতে ফিরবেন তখন রাত সাড়ে ১১টা। বাড়ি ফেরার জন্য কোনও যানবাহন তারা পাচ্ছিলেন না। এ কারণে ভ্যানে আলীপুর বন্দরে শেখ রাসেল সেতুর প্রান্তে এসে নামেন। এরপর হেঁটে সেতু পার হয়ে মহিপুর প্রান্তে যান। বাড়ি ফেরার জন্য সেখানেও তারা কোনও যানবাহন পায়নি।
তখন রাত সোয়া ১২টা। তারা শেখ রাসেল সেতুর মহিপুর প্রান্তের পূর্ব পাশের সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে একটি টাকার বান্ডিল পড়ে থাকতে দেখেন। টাকাটা তুলে হাতে নিতেই একজন মোটরসাইকেল চালক দৌড়ে এসে টাকা পাওয়ার কথা জানতে চান। একপর্যায়ে দুই ভাইকে জোর করে পাশের অন্ধকার জায়গায় নিয়ে যায় ওই মোটরসাইকেল চালক। তাদের কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালায় সে।
তখন দুই ভাই শক্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। এরপর তারা ৯৯৯-এ কল করে টাকা পাওয়ার কথা জানান।
৯৯৯ নম্বর থেকে জয়কে লাইনে রেখে মহিপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই নুরুন্নবীর সঙ্গে সংযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। খবর শুনে মহিপুর থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ আবুল খায়ের দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। এরপর টাকাসহ দুই ভাইকে মহিপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
Leave a Reply